বেঁচে থাকার জন্য সুন্দর থাকা, ভালো থাকাটা যতটা দরকার, তেমনই সুস্থ থাকাটাও জরুরি। সুস্থ ও সুন্দর থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভেষজের ওপর নির্ভর করা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ উপাদানগুলো আমাদের রান্নাঘর থেকেই আমরা পেয়ে থাকি। যেমন-
পুদিনা পাতাঃ
পুদিনায় রয়েছে মেন্থল যা হজমে সহায়ক, পেট ঠান্ডা রাখে, হাত-পা জ্বালা থেকে রক্ষা করে, বমি ভাব কমায়, মাথা ধরা, ক্লান্তি ইত্যাদির সমস্যায় পুদিনাপাতা হাতে নিয়ে একটু ম্যাস করে নাক দিয়ে ঘ্রাণ নিন। সর্দি-কাশি সারানোর জন্যও পুদিনা ভালো কাজ করে। রক্তস্বল্পতা ও অ্যাজমায় পুদিনার চাটনি বেশ উপকারী। এটি ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
ধনিয়াপাতাঃ
ধনিয়া পাতায় আছে লিনোলিক এসিড, এসেনশিয়াল এসিড, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি। ধনিয়া পাতায় লৌহের পরিমাণ বেশি বলে রক্তস্বল্পতায় উপকারী। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জন্য ধনিয়াপাতা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে, মাউথ আলসার ও বদহজম দূর করে। লিভার ও ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
পার্সলে পাতাঃ
পার্সলে ভিটামিন বি১২, ফলিক এসিড, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। ফ্লুরাইড থাকার কারণে এটি দাঁত ভালো রাখে। ত্বকের সমস্যা দূর করে ও হজমে সাহায্য করে। অ্যাজমা, সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
দারুচিনিঃ
গরম মসলার এ উপাদানটি যে কোনো ধরনের ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচায়। দারুচিনি ডায়বেটিসের ভেষজ হিসাবে বহু যুগ থেকে স্বীকৃত। এটি ঘাম হতে সাহায্য করে, হজমে সাহায্য করে, যন্ত্রণা নিবারণ করে। অ্যান্টিসেপটিকের কাজ করে। ব্যাকটেরিয়াজাত সংক্রমণ থেকে শরীরকে বাঁচায়। কোনো কারণে শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলে দারুচিনি সিদ্ধ পানি খেলে উপকার পাওয়া যাবে। খুব বেশি কাশি হলে দারুচিনি সিদ্ধ পানি দিয়ে গার্গল করলে ভালো হয়।
মেথিঃ
মেথি উচ্চ রক্তচাপ কমায় ও উচ্চ শর্করা থেকে মুক্ত থাকা যায়। মেথির গুঁড়া চুলের গোড়া শক্ত রাখতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ মেথি রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানিটুকু খেয়ে ফেলতে হবে।
তেজপাতাঃ
এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াস ও পটাশিয়াম। পেটের গোলমাল, হজমের সমস্যা দূর করতে তেজপাতা সাহায্য করে। ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ তেজপাতা সার্ভাইকাল ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। তেজপাতা সিদ্ধ পানি ও তেজপাতা পোড়ানো ধোঁয়া কাশির জন্য বেশ উপকারী।
লেমন গ্রাসঃ
এটি রক্ত সঞ্চালন ঠিক রেখে মাংসপেশিকে উন্নত করে। লেমন গ্রাস, লবঙ্গ, হলুদ, দারুচিনি দুধের সঙ্গে ফুটিয়ে পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ও সর্দি-কাশিতে উপকার হয়।
আমলকীঃ
ভিটামিন সি-এর বড় উৎস হলো আমলকী। আলসার, আন্ত্রিক প্রদাহ, পাকস্থলীর প্রদাহ, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদিতে আমলকী বেশ কার্যকর। খাবারের রুচি বাড়াতে এর কোনো জুড়ি নেই। আমলকী চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। আমলকী বাটার সঙ্গে তিলের তেল মুখে ঘষলে বয়সের ভাজ কম দেখায়। অকাল বার্ধক্য রোধেও আমলকী কার্যকর।
-সংগৃহীত ।
