একটি অটিজম শিশুকে চিকিৎসা প্রদানের জন্য চিকিৎসকেরা চেম্বারে যে সময়ের জন্য নিয়ে আসা হয় সে সময়ের মধ্যেও কোনো কোনো শিশু ঘুমিয়ে থাকে, কোনো শিশু ক্ষুধার জন্য বিরক্ত করে আবার কোনো শিশু চেম্বারের ভিতরে আসতে চাই না অর্থাৎ তাদের সকল লক্ষণসমূহ সঠিকভাবে অনুধাবন করা সম্ভব হয় না। অনেক সময় তাদের অভিভাবকগণও সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারেন না। এ কারণে তাদের চিকিৎসায় সঠিক ওষুধ এবং ওষুধের শক্তি ও মাত্রা নির্ধারণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে, চিকিৎসায় অনাকাক্সিক্ষত সময় অপচয় হয়। গত প্রায় ১০ বছর ধরে এ সকল শিশুর চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে যেয়ে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে। এদের মানসিক লক্ষণ সঠিকভাবে বুঝতে না পারলে সঠিক চিকিৎসা ব্যাহত হয়। এ সকল পরিবারের অভিভাবকগণও দিন দিন মানসিক সমস্যাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। ক্রমান্বয়ে তারা যেন সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন।
এদের সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য নিম্নবর্ণিত রূপরেখা প্রদান করা হলোঃ-
রূপরেখাঃ-
অটিজম শিশুদের চিকিৎসা কার্যক্রমকে সঠিকভাবে কার্যকরী করার জন্য রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী বড় পরিসরের এমন একটি জায়গা প্রয়োজন। সেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ, বিভিন্ন গাছ-গাছালি, ফল ও ফুলের বাগান হবে। বিভিন্ন প্রকার খেলা-ধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। যা দেখে তারা সেখানে থাকতে আগ্রহী হবে। এদের থাকার জন্য আবাসিক হল থাকবে। এদের খাবার-দাবার, সেবা-যত্ন সব সেখানেই থাকবে। লেখা-পড়াসহ যাবতীয় সকল কিছু সেখানেই হবে। এদের সকল অংশই ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার আওতায় থাকবে যাতে অবিভাবকগণ তার সন্তানের সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর জানতে পারেন। মূল উদ্দেশ্য হলো তাদেরকে খুব কাছ থেকে পর্যালোচনা করে সঠিক চিকিৎসাসেবা প্রদান করা এবং দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেয়া।
বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে স্বীস্কৃতিপ্রাপ্ত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে অটিজমসহ নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডারের সকল শাখার চিকিৎসা সম্ভব। শুধু প্রয়োজন আন্তরিক চিকিৎসা ও গবেষণা। অটিজম চিকিৎসায় দীর্ঘদিনের গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি হোমিওপ্যাথিক ওষুধের মাধ্যমে এসব শিশুর উন্নতি ঘটে ফলে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারছে। প্রয়োজন শুধু সঠিক উদ্যোগ। সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এই ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও বেসরকারি সমাজসেবক ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের প্রতি উদাত্ব আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা এগিয়ে আসুন, আমরা সকলে মিলে এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি। সেখান থেকেই শুরু হতে পারে অটিজম শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার নতুন গল্প।
পরিশেষে, সরকারি-বেসরকারি যথাযথ ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান, আর সময় নষ্ট না করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে এগিয়ে আসুন এবং লক্ষ্য রাখুন যেন প্রতিটি অটিজম শিশু সঠিক চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।
-সংগৃহীত ।