আলঝেইমার্স একটি নিউরোলজিক্যাল রোগ। এই রোগে মস্তিষ্কের কোষে এক ধরনের কেমিক্যাল জমা হয়। এতে কোষটি মারা যায়। দেখা দেয় স্মৃতিক্ষয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় কথা বলার সমস্যা, মানসিক সমস্যা। স্বাভাবিক জীবনযাপন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
অনেকে মনে করেন, ভুলে যাওয়া রোগ মানেই আলঝেইমার্স রোগ। কিন্তু এটা সত্যি নয়। ভুলে যাওয়া রোগকে চিকিৎসার ভাষায় বলে ডিমেনশিয়া। বাংলায় বলা যায় স্মৃতিক্ষয় রোগ। অনেক কারণেই ভুলে যাওয়া রোগ হতে পারে। মোটাদাগে এই কারণগুলো দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
ইররিভারসিবল বা অপ্রতিরোধযোগ্যঃ-
এ কারণগুলোতে যে ডিমেনশিয়া দেখা দেয়, তা কখনো ঠিক করা যায় না বা এটা দিন দিন বাড়তেই থাকে। খারাপ ধরনের ডিমেনশিয়া এটা। এ ধরনের ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির জীবনযাপন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। আলঝেইমার্স রোগ কিন্তু এ ভাগেই পড়ে। এটা ছাড়া আরো আছে ফ্রন্ট টেম্পোরাল ডিমেনশিয়া, ডিমেনশিয়া উইথ লিউ বডি, পারকিনসন্স ডিজিজ ডিমেনশিয়া, মাল্টি ইনফাকর্ট ডিমেনশিয়া, হান্টিংটন ডিজিজ, উইলসন্স ডিজিজ ইত্যাদি।
রিভারসিবল বা চিকিৎসাযোগ্যঃ-
মস্তিষ্কের কিছু কারণেও ডিমেনশিয়া দেখা দিতে পারে। এ ধরনের ডিমেনশিয়া চিকিৎসায় উন্নতি হয়। এ কারণগুলোর মধ্যে আছে ।
যেমন—
♦ মাদক সেবন।
♦ হরমোনের রোগ; যেমন—হাইপোথাইরয়েডিজম, হাইপো বা হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজম, অ্যাড্রেনালগ্ল্যান্ড ইনসাফিসিয়েন্সি।
♦ বিভিন্ন অঙ্গ ফেইলিওর; যেমন—কিডনি, লিভার, রেসপিরেটরি ফেইলিওর।
♦ ভিটামিনের অভাব; যেমন—ভিটামিন-বি১২, নিকোটিনিক এসিড, ভিটামিন-বি১।
♦ মস্তিষ্কের টিউমার।
♦ মস্তিষ্কের ক্রনিক ইনফেকশন-এইচআইভি, নিউরোসিসিলিস।
♦ মস্তিষ্কের আঘাত।
♦ নরমাল প্রেসার হাইড্রোকেফালাস।
♦ মানসিক কারণ—অবসাদ, সিজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি।
সাধারণত ৬০ বছরের বেশি বয়স্করা ডিমেনশিয়ায় বেশি ভোগেন। বয়স বাড়লে আক্রান্তের ঝুঁকি বেড়ে যায়। দেখা গেছে, ৮৫ বছরের বেশি বয়সীদের ২০ থেকে ৪০ শতাংশ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হন। আলঝেইমার্স ডিজিজ নামে রোগটি ডিমেনশিয়ার ৭০-৮০ ভাগ দায়ী। ডিমেনশিয়ার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ জায়গা নিয়ে আছে এটা।
- সংগৃহীত ।