শিশু শব্দটা শুনলেই মনে হয় কোমল, আদুরে কিছু। আসলে বিষয়টি এমনই। প্রতিটি পরিবারেই শিশু আনন্দের উৎস। এমন কম মানুষই আছে, যারা শিশুদের ভালোবাসে না, শিশুদের ক্ষতি চায়। কিন্তু আমরা নিজের অজান্তেই প্রতিনিয়ত শিশুদের ক্ষতি করে যাচ্ছি।
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি শিশু স্মার্টফোনে আসক্ত। তারা মুঠোফোনে গেমস খেলে, কার্টুন দেখে, ভিডিও দেখে সময় কাটায়। এমনকি স্মার্টফোন না পেলে কোনো কোনো শিশু খেতেও চায় না। তাই অভিভাবকেরা শিশুকে শান্ত রাখার জন্য, বিনোদনের জন্য তার হাতে মুঠোফোন তুলে দেন। অভিভাবকেরা বুঝতেও পারেন না তাঁরা শিশুদের কী পরিমাণ ক্ষতি করছেন। স্মার্টফোনে আসক্ত হওয়ার কারণে শিশুর যথাযথ সামাজিক বিকাশ ব্যাহত হয়। সামাজিক পরিবেশে শিশু সহজে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়। শিশুর সামাজিক দক্ষতা নষ্ট হয়। মুঠোফোনের রেডিয়েশনের কারণে শিশুর নানা ধরনের শারীরিক ক্ষতি হয়। শিশুর মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়।
মুঠোফোন ব্যবহারের কারণে শিশুর ক্ষতি হচ্ছে জেনেও মা-বাবা শিশুর হাতে ফোন দেন। অনেকে জানান, কিছুতেই শিশুকে মুঠোফোন থেকে দূরে রাখা যায় না, শিশু বুঝতে চায় না, শিখতে চায় না। কিন্তু আপনি কি জানেন, শিশুরা শুধু শেখে না, অনুকরণও করে। আপনি যা করবেন, শিশু ঠিক তা-ই করবে। এখন শিশুর মা-বাবা, কাছের মানুষ যদি তার সামনে অনবরত মুঠোফোন ব্যবহার করেন, তাহলে শিশুর অবুঝ মন এর প্রতি আকর্ষিত হবেই। শিশুর মনে কৌতূহল হবে সবাই যা নিয়ে ব্যস্ত, সেটির ভেতরে কী আছে, তা দেখার জন্য। এখন আবার দেখা যায়, বর্তমানে অনেক অভিভাবক শিশুকে নিয়েও নানা ভিডিও বানায়, যা মুঠোফোনের প্রতি শিশুর আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে তোলে।
শিশুকে মুঠোফোন থেকে দূরে রাখতে হলে অভিভাবকদের শিশুর সামনে এর ব্যবহারে বিরত থাকতে হবে। শিশুকে সময় দিতে হবে, শিশুর সামনে আপনি বই পড়েন দেখবেন শিশুও বই পড়তে চাইবে। কারণ, শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। আপনি ছাদ বা ব্যালকনিতে গাছের পরিচর্যা করবেন, শিশুও সেটির দিকে আকৃষ্ট হবে। স্মার্টফোনের বাইরে সময় কাটানোর আরও আরও অনুষঙ্গ আছে, যেগুলো শিশুর সামনে করুন। প্রত্যেক মা-বাবার উচিত শিশুর কল্যাণের কথা বিবেচনা করে তাদের সামনে কম স্মার্টফোন ব্যবহার করা; তবেই আপনার শিশুকে স্মার্টফোনের আসক্তি থেকে দূরে রাখতে পারবেন। -সংগৃহীত ।
