রোটা ভাইরাস খুব সংক্রামক একটি ভাইরাস। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগে, ৫ বছর বয়সের মধ্যে অন্তত একজন শিশু এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হতো। রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রচুর তরল খাবার খেতে হয়। কারণ তখন শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। গুরুতর পানিশূন্যতা দেখা দিলে হাসপাতালে শিরার মাধ্যমে স্যালাইন দিতে হয়।
শিশুদের ( ৩ থেকে ৩৫মাস) মধ্যে রোটা ভাইরাস খুবই সাধারণ। রোটা ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার দুই দিনের মধ্যেই এর লক্ষণ শুরু হয়। প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে, জ্বর এবং বমি। এরপর তিন থেকে সাত দিন থাকবে পানিযুক্ত ডায়রিয়া। সংক্রমণের ফলে পেটে ব্যথাও হতে পারে। সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেই দেখা দিতে পারে কিন্তু লক্ষণগুলো কম প্রকাশ পায়।
লক্ষণঃ-
দূষিত খাবার বা পানি খাওয়ার দুই দিনের মধ্যে এই লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমনঃ-
১. জ্বর
২. পেট খারাপ
৩. পেটে ব্যথা
৪. খিদা কমে যাওয়া
৫. মুখ বা গলা শুকিয়ে যাওয়া
৬. মাথা ঘোরা
৭. বিরক্তি বা অস্বস্তি বোধ।
৮. তিন থেকে সাত দিন পানিযুক্ত ডায়রিয়া।
যেসব শিশুরা রোটা ভাইরাসে আগে একবার আক্রান্ত হয়েছিল তারা আবার আক্রান্ত হতে পারে। তবে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হয়ে যায়। তাই বেশি কাবু করতে পারে না। তবে যেসব শিশুরা প্রথমবার আক্রন্ত হয় তাদের অবস্থা একটু বেশি গুরুত্বর হয়।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?
শিশুঃ-
** ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ডায়রিয়া।
** ঘন ঘন বমি এবং ঘন ঘন পায়খানা করলে।
** কালো পায়খানা বা রক্ত এবং পুঁজযুক্ত পায়খানা হলে।
** জ্বর ১০২ বা তার বেশি।
** ক্লান্ত, খিটখিটে বা পেটে ব্যথা থাকলে।
** পানি শূন্যতার লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে। যার মধ্যে রয়েছে শুষ্ক মুখ, কাঁদলে চোখ দিয়ে পানি বের না হওয়া , অল্প বা প্রস্রাব না করা, অস্বাভাবিক ঘুম এবং প্রচণ্ড নেতিয়ে পড়লে।
প্রাপ্তবয়স্কঃ-
** ২৪ ঘণ্টার জন্য তরল শরীরে থাকছে না।
** দুই দিনের বেশি ডায়রিয়া।
** বমি বা মলত্যাগের সময় রক্ত যাচ্ছে।
** জ্বর ১০৩ বা এর চেয়ে বেশি।
** অত্যধিক তৃষ্ণা, শুষ্ক মুখ, অল্প প্রস্রাব, গুরুতর দুর্বলতা, দাঁড়ালে মাথা ঘোরা বা হালকা মাথাব্যথা সহ পানি শূন্যতার লক্ষণ।
কী কারণে হতে পারে?
** আক্রান্ত ব্যক্তির মলের সংস্পর্শে গেলে
** অপরিচ্ছন্ন থাকলে
** আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে।
** দূষিত বা যেকোন ধরনের খাবার এবং পানি খেলে।
গুরুতর ডায়রিয়ার কারণে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের মধ্যে। চিকিৎসা না করা হলে, ডিহাইড্রেশনের কারণে মৃত্যু ঝঁকিও থাকে। তাই অবস্থা বুঝে শিশুকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। তবে শিশুদের রোটা ভাইরাসের টিকা পাওয়া যায়। চিকিৎসকের সাথে কথা বলে শিশুদের নির্দিষ্ট সময়ে টিকা দিয়ে দিতে হবে।
-সংগৃহীত ।
