শীত আসার আগেই সর্দি, জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দিতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছেন অভিভাবকরা।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের পর বাতাসের আর্দ্রতা কমতে শুরু করার সঙ্গে বাড়ছে ধুলাবালি। আবহাওয়ার এই পরির্বতনে রাজধানীতে ক্রমে বাড়ছে বায়ুদূষণ। এসব কারণে ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে মৌসুমি রোগের প্রকোপ।
গত দুই দিন ঢাকা শিশু হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং মহাখালী উদরাময় হাসপাতাল (আইসিডিডিআরবি) ঘুরে দেখা গেছে, এসব হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এক সপ্তাহ ধরে সাধারণ সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা-জ্বর, হাঁপানি, শ্বাসকষ্টজনিত রোগসহ নিউমোনিয়া, ব্রংকিউলাইটিস, ডায়রিয়া, ফুসফুসের সংক্রমণ এবং চর্মরোগের রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে হাসপাতালে। এর মধ্যে হাসপাতালে শিশুরা বেশি আসছে ব্রংকিউলাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি এবং সাধারণ সর্দি-কাশি নিয়ে। আর বয়স্করা আসছেন অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ (সিওপিডি) ও চর্ম রোগ নিয়ে।
গতকাল রবিবার ঢাকা শিশু হাসপাতালের নিচতলার ২ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, দুজন চিকিৎসক ও একজন নার্স চার মাস বয়সী শিশু লামিয়ার পরীক্ষা-নীরিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত। শিশুটিকে নিয়ে আসা হয়েছে মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকা থেকে। লামিয়ার মা লুত্ফা ইসলাম জানান, সকালে হঠাৎ শিশুটির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। প্রথমে শিশুটিকে নেবুলাইজার দেওয়া হয়। তাতেও শ্বাসকষ্ট না কমায় দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে আমাদের হাসপাতালে রোগী বাড়ছে। এখানকার ৬৮০টি শয্যার একটিও বর্তমানে ফাঁকা নেই। আইসিইউ, এনআইসিইউ, পিআইসিইউ, এইচডি, এসকেবির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক রোগীর আইসিইউ প্রয়োজন, আমরা দিতে পারছি না। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে প্রতিদিন বহির্বিভাগে গড়ে ২০০ রোগী বেশি আসছে। ’ তিনি জানান, সাধারণ সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা-জ্বরের সঙ্গে ব্রংকিউলাইটিস, অ্যাজমা, নিউমোনিয়ার রোগী উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। এর মধ্যে দুই মাস বয়সী শিশুরা বেশি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিত্রও এক। গত শনিবার হাসপাতালটির মেডিসিন বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, রোগীদের দীর্ঘ সারি। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৬৫৪ জন রোগী বহির্বিভাগ থেকে টিকিট নিয়ে এখানে এসেছে এন্ট্রি করাতে।
‘শীতে কুয়াশা, ধুলাবালির মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ঘুরে বেড়ায়। এখন যেহেতু মানুষ মাস্ক পরা কমিয়ে দিয়েছে সে জন্য সহজেই ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস শরীরে ঢুকে পড়ছে। এতে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ’ ‘অ্যাজমার অন্যতম প্রধান কারণ অ্যালার্জি। কোনো খাদ্যে কারো অ্যালার্জি হলে যথাসম্ভব তা পরিহার করা উচিত। আর ধুলাবালি, ধোঁয়া, গন্ধ, ঘরের ঝুল ইত্যাদি এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।
-সংগৃহীত ।
