গরুর লাম্পি স্কিন ভাইরাসজনিত রোগ। এখন পর্যন্ত এ রোগের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে প্রথমে জ্বর দেখা দেয় এবং খাবারের রুচি কমে যায়। জ্বর বেশি হলে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ও গলা ফুলে যায়। আক্রান্ত গরুর বুকের নিচে দুই পায়ের মাঝে পানি জমে। গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়ায় গুটি গুটি ক্ষত হয় এবং পচন ধরে। সেই সঙ্গে চামড়া থেকে লোম উঠে যায়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেওয়া শুরু করলে এই রোগে আক্রান্ত পশুর সুস্থ হতে প্রায় এক মাস সময় লাগে। বড় গরু লাম্পি স্কিন রোগে তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে থাকলেও বাছুর গরু আক্রান্ত হলে দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ঝুঁকি বেশি থাকে।
গত ১৭ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ছয় দিনে সদর, রাণীনগর, মান্দা, বদলগাছী, পোরশা, পত্নীতলা, আত্রাই, নিয়ামতপুর ও মহাদেবপুর উপজেলায় ৩০টি গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এ সময়ের মধ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়ে জেলার ১১টি উপজেলার পশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গরুর সংখ্যা ছিল ৫২৫টি।লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে প্যারাসিটামল ও সর্দি থাকলে হিস্টাসিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ানোর চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়া স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বসন্তের একটি জাত ভাইরাসের মাধ্যমে এই রোগটি ছড়াচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ রোগ সারাতে কার্যকর কোনো ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি।
গরুর লাম্পি স্কিন রোগ একটা ভাইরাসজনিত রোগ। মশা, মাছি জাতীয় রক্ত খায় এমন পতঙ্গের মাধ্যমে এক গরু থেকে আরেক গরুতে এই রোগ ছড়ায়। রোগটা যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে এজন্য আমরা খামারি ও কৃষকদের গরুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখা ও মশা, মাছি ও ডাশের কামড় থেকে রেহায় পেতে মশারি ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।