রাতে এক গ্লাস দুধ খেয়ে ঘুমানোর অভ্যাস অনেকের। কেউ আবার ঘুমের আগে কেবল পানিই খান। আদতে কোন ধরনের তরল গ্রহণ করা উচিত রাতে? কোনগুলোই–বা এড়িয়ে চলা উচিত সন্ধ্যা থেকে?
পানিঃ
রাতে ঘুমের পুরোটা সময় আমরা কোনো কাজ না করলেও দেহের ভেতর চলতে থাকে নানা ক্রিয়া–বিক্রিয়া। সেসব ক্রিয়া–বিক্রিয়ার জন্য পানি অপরিহার্য। তাই রাতে ঘুমের আগে এক গ্লাস পানি খাওয়া ভালো অভ্যাস।
তাতে সারা রাতে আপনার পানিশূন্য হয়ে পড়ার ঝুঁকিও কমে। তবে আপনি চাইলে পানির পরিবর্তে এমন পানীয়ও খেতে পারেন, যা পানির এই চাহিদা পূরণ করবে।
ডিটক্স পানিঃ
রাতে পানির পরিবর্তে আপনি ডিটক্স পানি খেতে পারেন অনায়াসেই। ডিটক্স পানি ঘুমের জন্য ভালো। এ ছাড়া এসব পানীয় দেহের বিপাক হার কিছুটা বাড়ায়। অর্থাৎ বাড়তি মেদ কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে এসব পানীয়। ডিটক্স পানি ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। এসব পানীয় ছাঁকা উচিত নয়। কুসুম গরম পানি দিয়ে তৈরি করতে পারেন ডিটক্স পানি।
রাতে যেসব উপকরণ দিয়ে ডিটক্স পানি তৈরি করতে পারেন—
=> আদা ও লেবু
=> দারুচিনি (সঙ্গে মধুও দেওয়া যেতে পারে)
=> হলুদ ও গোলমরিচ
=> শসা ও লেটুসপাতা
=> মেথি, জৈন ও গুয়ামৌরি (অ্যাসিডিটি কমাতে এই পানীয় দারুণ)
রাতে পানির পরিবর্তে আপনি ডিটক্স পানি খেতে পারেন অনায়াসেই
দুধঃ
রাতে শোয়ার আগে দুধ খেলে ঘুম ভালো হবে কি না, ব্যাপারটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়। তবে অনেকেই শোয়ার আগে দুধ খান। এটি তাঁদের ঘুমের জন্য মানসিক প্রস্তুতির একটা অংশ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু অনভ্যস্ত ব্যক্তির জন্য হঠাৎ রাতে দুধ খেতে শুরু করাটা অস্বস্তিকর হতে পারে।
কারও জন্য গরম দুধ ভালো, কারও জন্য ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করা দুধ ভালো। কেউ আবার স্বাভাবিক তাপমাত্রার দুধ খান। এ বিষয়টি ব্যক্তিভেদে আলাদা। দুধ খেলে পানির চাহিদা তো মিটবেই, মিলবে পুষ্টিও। তবে আপনি দুধ রাতে খাবেন নাকি দিনের অন্য কোনো সময়ে, ঠিক করে নিন আপনার স্বাচ্ছন্দ্যের ভিত্তিতেই।
চিনি মেশানো পানীয়ঃ
চিনি মেশানো পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য কখনোই ভালো নয়। বিশেষত রাতে আপনি যদি এ ধরনের পানীয় খান, তাহলে এই বাড়তি ক্যালরি আপনি পোড়ানোর সুযোগও পাচ্ছেন না। তার ওপর রাতে চিনি মেশানো পানীয় খাওয়া হলে তাতে অ্যাসিডিটির ঝুঁকি বাড়ে।
বাদামি চিনি, কৃত্রিম চিনি, মধু বা গুড় কোনোটিকেই চিনির স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে ধরে নেওয়ার সুযোগ নেই। অর্থাৎ কোমল পানীয়, সোডা, চিনি মেশানো ফলের রস বা শরবত—কোনো কিছুই খাওয়া উচিত নয় রাতে। রাতের পানির চাহিদা মেটাতে উপযোগী পানীয় নয় এসব।
চা, কফি ও চকলেট মেশানো পানীয়ঃ
বিকেলের পর চা, কফি কিংবা চকলেট মেশানো পানীয় না খাওয়াই ভালো। এসব পানীয়তে থাকা ক্যাফেইনের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এ ধরনের পানীয় খেলে রাতে প্রস্রাবও বেশি হতে পারে। তবে কিছু ভেষজ চা ঘুমের জন্য সহায়ক হতে পারে। যেমন ক্যামোমিল চা, অশ্বগন্ধা চা প্রভৃতি খাওয়া যেতে পারে সন্ধ্যায়।
যেকোনো তরলের বেলায় খেয়াল রাখুনঃ
শোয়ার ঠিক আগমুহূর্তে পানি খেতে নেই। বরং শোয়ার অন্তত এক-দেড় ঘণ্টা আগে পানি খাওয়া উচিত। রাতের খাবার খাওয়ার এক-আধ ঘণ্টা পর পানি খাওয়ার অভ্যাস করা ভালো।
রাতে খুব বেশি পরিমাণে পানি না খাওয়াই ভালো। তাতে ঘুমের মাঝে বারবার প্রস্রাবের চাপ হতে পারে। এসব নিয়ম অন্যান্য তরল খাবারের জন্যও প্রযোজ্য।
-সংগৃহীত ।